তোমাকে ভালোবাসেই যাবো সোনাপাখি






তোমাকে ভালোবাসেই যাবো সোনাপাখি

অনেক কষ্টের জীবনে পেলাম একটু খানি সুখের দক্ষিণা হওয়া। প্রিয় পাঠক আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার নতুন প্রেমের গল্প। আমি একটি মেয়েকে তিন বছর ধরে অনেক ভালোবাসতাম কিন্তু আমাকে ভালো বাসতো না। জানতে পারলাম অন্য একটি ছেলের সাথে প্রেম করে। তাই আমিও সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম কোনোদিন কোন মেয়ের সাথেই প্রেম করবো না। কিন্তু অন্য একটি নতুন মেয়ে এসে আমার পুরো জীবনের ইতিহাসটাই পালটে দিল। সে আর কেও না আমার আপন খালাত বোন। আমার নাম মেহেদী, বাড়ী রাজবাড়ী পাংশা থানায়। শাহারিয়া ভাইয়ের আগের গল্পটি পরে আমার মনে হল আমার জীবনের গল্পটিও একটি ভালো মানের ওয়েবসাইটে দিব তাই ভাইয়ের সাথে -মেইলে কন্টাক করে গল্পটি অনলাইনে ছারলাম। আসাকরি ভালো লাগবে আপনাদের। আমার প্রেমের বারটা বেজে অসহায় জীবন কাটাচ্ছিলাম। তাই নিজেকে বড় একা লাগছিল। প্রেমের জন্য মরিহা হয়ে গেলাম তাও মেয়েটি রাজি হল না।


আমি যখন বিরহের মাঝে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম ঠিক তখন আমার জীবনে আসলো নতুন প্রেমের সূচনা। আমার খালাতো বোনকে দেখলাম প্রায় চার বছর পর। যখন ক্লাস ফাইবে পরতো তখন ওকে বলতাম খ্রিষ্টান কারন ওকে দেখতে সাদা দবদবে চুল লালটে ছিলো বলে। থাকে পাহাড়ী অঞ্চলে সিলেটে। ওর নাম মারিয়া। আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসলো দীর্ঘ চার বছর পর। এর মাঝে দেখিনি। আমি অনার্স ফাইনাল দিব। ওকে পিচ্চি দেখেছি আর আজ চোখের সামনে কাকে দেখছি সেটাই বুঝতে পারছি না। সব দিক থেকেই পাল্টে গেছে তাই আমি কথা বলতে গেলাম আর আমাকে দেখে ভাব নিল কথা বললো অনেক ভাব নিয়ে। তখন বুঝলাম মারিয়া আর আগের মারিয়া নেই। আগেও মারিয়াকে নিয়ে ভেবেছি কিন্তু প্রেমের জন্য ভাবিনি।



আমার মনে হত কোন উপায় যদি না হয় সরাসরি মারিয়াকে বিয়ের প্রস্তাবদিব। সে দিন যে সামনে উপস্থিত হয়ে গেছে এত তারাতারি। যানতে পারলাম খালার মুখ থেকে মারিয়া পরিবারের জন্য অনেক কাজ করে দেয় কাজের বুয়ার সাথে। কারন খালা বেশির ভাগ সময় অসুস্থ থাকে। মারিয়ার মনে নাকি অনেক দয়ামায়া। কারও কষ্ট দেখলে সেখানে যাবে এমনকি টাকা দিয়ে পারুক আর পরিশ্রম করে পারুখ তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করবেই। তার পর মারিয়াকে দেখে আমার ভিতরে প্রেমের ঘন্টা তো আগে থেকেই বেজে আছে। একে তো ঢোলের বাড়ি তার উপর নাচনি বুড়ি। সবচেয়ে বড় কথা মারিয়ার হাসির তুলোনা করা যায় না কোন কিছুর সাথে। মন খুলে হাসতে জানে পাগলি। আমি এক একটা গল্প বলছিলাম আর হাসতে লাগলো মানে আমি গল্প বলছিলামই ওর হাসি দেখার জন্য। হাতে আর দু দিন সময় আছে কিভাবে বলি যদি আগের টার মত রাজি না হয় সে ভয়টা এখনও কাটেনি।


  মাঠে নামলে আটঘাট বেধেঁই নামবো। তাই ভাবলাম সরাসরি খালাকেই বলবো যে মারিয়াকে আমি বিয়ে করবো। আমার বিশ্বাস আছে আমার পরিবার থেকে এতে অমত করবে না। কিন্তু খালাকে রাজি করালেই সব সমস্যার সমাধান। কিন্তু খালা আমাকে ছেলে হিসাবে অনেক ভালো চোখে দেখে সেটা বুঝতেই পারলাম। আমার মা আমার যত সুনাম ছিলো একটাও মনে হয় খালা আর মারিয়াকে শুনাতে বাদ রাখেনি। খালা আর আমাদের মাঝে তফাত্টা হলো খালারা একটু নগদ টাকার মালিক আর শহরে ফ্লাট কিনে থাকে আর আমরা মধ্যম আয়ের পরিবার। তার উপর আমি কেবল পরাশুনা করে যাচ্ছি কোনো ইনকাম নেই। এমন অবস্থায় যদি খালা রাজি না হয়। সাহস করে মারিয়াকে বললাম তোমার আম্মুকে এই ঘরে ডাকো তো। মারিয়া বললো কেনো ভাইয়া, আমি বললাম দরকার আছে। মারিয়া খালাকে গিয়ে বললো আম্মু মেহেদী ভাইয়া তোমাকে ডাকছে। খালা এসে বসলো সাথে মারিয়াও দাড়ানো। খালা বললো কিরে বাপ কিছু বলবি। আমার প্রচুর টেনশন হচ্ছিল কিভাবে শুরু করি বুঝতে পারছিলাম না তাই বললাম তেমন কিছু না। শুনুন আমার সেদিনের বক্তব্য


আমিঃ আচ্ছা খালা আমি কি ছেলে হিসাবে খারাপ?
খালাঃ কেরে বাপ হঠাত্ এই প্রশ্ন?
আমিঃ না মানে এই যে আমি বেকার।
খালাঃ আরে পাগল পড়াশুনা করলে তো বেকার থাকেই।
আমিঃ মারিয়ার কি অন্য কোথাও সম্পর্ক আছে?
মারিয়াঃ আম্মু মেহেদী ভাইয়া মনে হয় পাগল হয়ে গেচ্ছে পাবনা পাগলা গারতে পাঠাও।
খালাঃ মারিয়া চুপ কর(ধমক দিয়ে) বাপ তরে কেউ কিছু বলছে।
আমিঃ না। এমনি জিজ্ঞাসা করলাম।
খালাঃ পাগল মারিয়া ছোট না এরকম কিছু তো মনে হয় ভালো মত বোঝেই না।
আমিঃ খালা আমার মারিয়াকে পছন্দ হয়েছে বিয়ে যদি করি তাহলে আপনার মেয়েকেই করবো।
খালাঃ চুপচাপ।

আমিঃ মনে করেন আমি ছেলে হিসাবে উপযুক্ত না তবুও মানুষ তো আর সারা জীবন বেকার থাকে না। আজ মারিয়াকে নিয়ে আমার থেকে অনেক ভালো একটা ছেলের সাথে বিয়ে দিলেন কিন্তু এতে মারিয়া যে সুখে থাকবে তার গেরান্টি দিতে পারবেন? অনেক ভালো ঘরে বিয়েদিবেন ঠিকই কিন্তু সুখের গেরান্টি দিতে পারবেন না কারন সুখে রাখার মালিক আল্লাহ। মনে করেন ছেলে ডাক্তার ভালো ধনি ঘরে ওর বিয়ে দিলেন মানে আপনাদের থেকেও ভালো ঘরে কিন্তু ছেলের সমন্ধে আগে থেকে তেমন কিছু জানেননা বিধায় ছেলের অন্য সম্পর্ক আছে অন্য মেয়ের সাথে। মারিয়াকে তেমন ভালো যানে না তখন কি আপনি শান্তিতে থাকতে পারবেন। মারিয়াই একটা অপরাধ করলো স্বামী হয়ে যতটা ওকে কষ্ট দিবে আমি কি ওকে কষ্ট দিতে পারবো ওরকম। আমি যদি একটা অন্যায় করি আমাকে যেমন করে শাসন করতে পারবেন সেরকম করে পরের ছেলেকে কি কিছু বলতে পারবেন। মারিয়ার কিছু হলে আমি যেমন ভাবে সুখ দঃখের সঙ্গি হয়ে থাকবো অন্য কোন ছেলে থাকবে তার গেরান্টি দিতে পারবেন। আমার সমন্ধে আপনি ভালোই জ্ঞান রাখেন কারন আপনাদের সন্তান আমি। শুনেছি খালার শরীর দিয়ে নাকি মার শরীরের গন্ধ রয়েছে। মা না থাকলে খালাই মা হয়ে যায়। তাই ছেলে হয়ে মায়ের কাছে আবদার করলাম দেখেন কি করবেন।

খালাঃ বেশি পাকনা হয়ে গেছিস। মারিয়ার সামনে কথা গুলি না বললেও পারতি। ওর সামনে এসএসসি পরিক্ষা। মারিয়া এখান থেকে যাও আর তোমার খালামনিকে ডেকে পাঠাও।
মারিয়াঃ ঠিক আছে বলে চলে গেলো।
মাঃ কিরে কি হইছে।

খালাঃ তোর ছেলের সাথে যে আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক করা সেটা বলিসনি আগে তোর ছেলেকে আমার মাথা খেয়ে ফেলছে।

আমি মনে হয় যেনো আসমান ভেঙ্গে মাটিতে পরলাম। মা বললো ওকে বলার কি আছে তোর মেয়ে এসএসসি পরিক্ষা দিলেই তো নিয়ে আসবো এখানে থেকে পরবে।

আমিঃ খালা মারিয়া কিছু যানে না।

খালাঃ না কিছু যানে না আর যানানোর চেষ্টাও করিস না তাহলে পরিক্ষায় রেজাল্ট খারাপ করবে।
আমিঃ ঠিক আছে। এই বলে আমি মারিয়া যে রুমে টিভি দেখছে সেই রুমে গেলাম।

 আমার মত আর একটাও সুখী মানুষ নেই। মারিয়াকে বললাম ভালো একটা চ্যানেলে দাও। পুরো ভয়ে কেপেঁ উঠলো। আমাকে দেখে লজ্জায় কথা বলা তো দুরে তাকাতেই পারছিলো না। কারন ওকে কোন কিছু না বলেই সরাসরি ওর মাকে বলেছি বলে আমাকে দেখে ভয় পাচ্ছে। মারিয়া আছে আজ দুপুর হতে রাত ৯টা সময় তার পর বাসের টিকিট কাটা সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা হবে। মারিয়া জানে চলে যাব তাই যতটুকু সময় আছে আমার পাশেই থাকতে চাইছে। একটু পরে মারিয়া আসতে করে বলছে আম্মু কি আপানর সাথে রাগারাগি করেছে। আমি বললাম হ্যা তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য না হয় একটু বকা খেলাম। মারিয়া বললো আমাকে যদি আগে জানাতেন তাহলে আম্মুকে কিছুই বুঝতেদিতাম না আর আপনাকে অপমান হতে হত না। বুঝলাম মারিয়া কিছুই যানে না। মারিয়াকে আস্তে করে বললাম আমার বউটার হাসিটা যা কিউট তখন মারিয়া হেসে দিয়ে বললো পাগল একটা।

  আবার বললাম আমার বউ এত সুন্দর কেনো বললো কে আপনার বউ। আমি বললাম আছে একজন যে বুঝেও বুঝতে চায়না। বললো হতে পারে কিন্তু আমাকে এর মাঝে টেনে আনবেন না আম্মু শুনলে আমাকে অনেক মারবে। এভাবে যতখন না যাওয়ার সময় হল ওদের ততক্ষন আমি আর মারিয়া মজা করলাম কিন্তু ওকে খুলে বললাম না কারন ওর পরাশুনার ক্ষতি হতে পারে বলে। বাড়ি থেকে বেড় হব তখন মারিয়াকে এত মিছ করছিলাম মনে হল এখনই রেখে দেই এমন সময় মারিয়া বললো মেহেদী ভাইয়া বড়ই খাবেন। আমি বললাম হুম। তারপর ওর কাছে যেতে গেলাম সরে গিয়ে সবার আড়াল হয়ে আমাকে বড়ই খাইয়েদিয়ে বললো ফোনে যেনো ওর সাথে কথা বলি মাঝে মাঝে। আমার মনে হলো আমার কত আপন জন যেনো আমাকে ছেরে দুরে চলে যাচ্ছে। জখন মেইন রোডের কাছে গেলাম তখন আমার চোখ লাল হয়ে গেলো দুঃখে মারিয়া আমার চোখের দিকে তাকিয়ে এক মিনিটের মধ্যে কেদেঁ ফেললো। খালা আর মারিয়ার কান্না থামাতে পারল না। বাসে উঠার সময় পর্যন্ত আমার পাশে দাড়িয়ে কেদেছিলো। তারপর ওরা সিলেট আর আমি বাড়ি। যানিনা কি হবে পরে এত করে খালাকে বলছি একটা স্মার্ট ফোন কিনতে কিছুতেই শুনছে না। কারন নাকি মারিয়ার পরাশুনা নষ্ট হয়ে যাবে। তাই না দেখেই কথা  বলে যাচ্ছি তাই আমাদের বিয়েটা যাতে সফলভাবে হয় তার জন্য দোয়া করবেন।




No comments

Powered by Blogger.